হজযাত্রা তখন এখনকার মতো সহজ ছিল না। নানা বাধাবিঘ্ন ও বিপৎসঙ্কুল পথ পাড়ি দিয়ে অতঃপর হজে শামিল হতেন বাঙালিরা।
আজ থেকে মাত্র তিন-চার দশক আগেও বাঙালি মুসলমানদের জন্য হজ করে হাজি হওয়াটা ছিল অনেকটা যুদ্ধ জয়ের মতো। থাকতে হতো শারীরিক সামর্থ্য, দৃঢ় মনোবল আর যথেষ্ট পরিমাণের সহায়–সম্পত্তি। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটা ছিল যাতায়াত ব্যবস্থা। যিনি হজ করে ঘরে ফিরতে পারতেন তিনিই ছিলেন যুদ্ধজয়ী বীরের সমান মহান-মর্যাদাবান।
পুরো হজযাত্রায় লেগে যেত ছয় মাস কখনোবা আরও বেশি।
আরবীয়দের মতো গায়ে আলখাল্লা, মাথায় পাগড়ি আর হাতে জমজমের পানি ও খেজুর নিয়ে বাড়ি ফিরতেন হাজিরা। তখন তাঁদের শরীরে রাজ্যের ক্লান্তি থাকলেও মনভরা থাকত তৃপ্তিতে। সেকালের বাঙালি সমাজে হাজি সাহেবের অভ্যর্থনায় ভেঙে পড়ত পুরো গ্রাম। হজফেরত হাজি তিনি যেন বিজয়ী বীর, অন্য এক মানুষ। ফলে তাঁর নামে বদলে যেত গ্রামের নাম, নতুন নাম হতো—হাজিপুর, হাজিগ্রাম কিংবা হাজিপাড়া।
আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের নন্দিরগাঁও গ্রামের কয়েকটি হাজি বাড়ি রয়েছে।
তৎকালীন বৃটিশ আমলে ঐতিহ্যবাহী নন্দিরগাঁও গ্রাম থেকে যারা হেঁটে,পানি জাহাজে চড়ে পবিত্র হজ্ব পালন করেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন:
০১. আলহাজ্ব মরহুম আহমদ আলী
০২. আলহাজ্ব মরহুম আব্দুল আলী
০৩. আলহাজ্ব মরহুম কুদরত আলী
০৪. আলহাজ্ব মরহুম মুসিম আলী
০৫. আলহাজ্ব মরহুম ইদ্রিস আলী
০৬. আলহাজ্ব মরহুম মোবারক আলী
০৭. আলহাজ্ব মরহুম জমশর আলী